Sonaly Khobor

খলিলুর রহমান :

চট্রগ্রাম জেলার, বন্দর থানাধীন, ডাকঘর- বন্দর, ৩৮ নং ওয়ার্ড, ২নং মাইলের মাথা (শ্যামা পুকুর পাড়), দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, সৈয়দ কলোনীতে সর্বশেষ বিগত ১০/০২/২০২৫ খ্রি:/ তারিখ রাত অনুঃ ৯.০০ ঘটিকার সময় নারী ও শিশু নির্যাতন’র ঘটনা ঘটে। কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার, বড়ুয়াপাড়া,জালাল আহমেদর বাড়ি/ গ্রামের মাতা- তৈয়বা খাতুন,পিতা- মৃত জাহাঙ্গীর আলম এর কন্যা তাসফিয়া আকতার প্রঃ ইলা (২১) বর্তমানে-চট্রগ্রাম জেলার, বন্দর থানাধীন, ডাকঘর- বন্দর, ৩৮ নং ওয়ার্ড, ২নং মাইলের মাথা (শ্যামা পুকুর পাড়), দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, সৈয়দ কলোনীতে বসবাস করা কালীন, ভোলা জেলার, দৌলতখান উপজেলার, দিদারুল্লাহ গ্রাম’র মাতা- আয়েশা খাতুন,পিতা- মোঃ বাচ্চু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আনোয়ার (২৫)’র সাথে পরিচয় হয়। ঘটনার বিবরণে মামলার বাদীনি তাসফিয়া আক্তার ইলা জানায় যে,আমি একজন অত্যন্ত সহজ, সরল ও দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সুনাগরিক এবং মুসলিম পরিবারের কন্যা হই। পক্ষান্তরে আসামী একজন নারী লোভী এবং বেপরোয়া প্রকৃতির লোক হয়। সে দেশের আইন কানুন মোটেই মান্য করে না। আমি একজন গার্মেন্টস কর্মী হই। অপরদিকে আসামী আনোয়ার একই গার্মেন্টেসের চাকুরীজীবী হয়। আমি ও আসামী আনোয়ার উভয়ে চাকুরীর সুবাধে পরস্পর পরস্পরের মধ্যে জানাশুনা ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে আসামী প্রতারণার আশ্রয়ে কৌশলে আমার সহিত প্রেমের অভিনয় করে আমাকে বিবাহ করিবে মর্মে বিশ্বাস জন্মাইয়া আমার সহিত স্বামী-স্ত্রী রূপে সংসার করার আশ্বাসে বিগত ০১ মে ২০২৪ খ্রি:/ তারিখে সন্ধ্যা অনুমান ৭.০০ ঘটিকার সময় আমার বর্তমান ঠিকানাস্থ বাসা ভাড়ায় নিয়া তথায় “বিবাহের যৌথ হলফনামা” শিরোনামে লেখা ০৩ (তিন) টি ১০০/- টাকা মূল্যের ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ০৩ (তিন)টি স্বাক্ষর গ্রহণ করতঃ এবং নিজেও স্বাক্ষর করিয়া আমার ও আসামী আনোয়ার এর মধ্যকার আইনগতভাবে বিবাহ সম্পন্ন হইয়াছে মর্মে বিশ্বাস জন্মাইয়া এবং অনতিবিলম্বে কাজী অফিসের মাধ্যমে কাবিননামা রেজিস্ট্রি করিয়া নিবে মর্মে অঙ্গীকার করতঃ আসামী আনোয়ার আমাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে প্রলুব্ধ করে। আমি সরল বিশ্বাসে আসামীর আনোয়ার এর মিথ্যা প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে পড়ার সুযোগে আনোয়ার’র আমি বিবাহিত স্ত্রী না হওয়া মর্মে আসামী অবগত থাকা সত্ত্বেও আনোয়ার আমাকে প্রথম বারের মতো ধর্ষণ করে। তৎপরবর্তী হইতে আসামী আনোয়ার উল্লেখিত ঘটনাস্থলে স্ত্রী সহবাসের নামে প্রতিনিয়ত আমাকে ধর্ষণ করিতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি আসামী আনোয়ারকে বিবাহের কাবিননামা সম্পাদন করার জন্য বলিলে আসামী বিভিন্ন অজুহাত দেখাইয়া আজ নয় কাল বলিয়া কালক্ষেপন করিতে থাকে। আসামীর আনোয়ার ধর্ষণের ফলে এক পর্যায়ে আমি অন্তঃসত্ত্বা হইয়া পড়ি। আমি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়ে আসামী আনোয়ারকে জানাইলে আসামী আনোয়ার তাহা নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিগত ০৮/১১/২০২৪ খ্রি:/তারিখে বন্দর থানাধীন “নিউ চাঁদের আলো” নামক হাসপাতালে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ কোহিনুর বেগম এর নিকট চিকিৎসা গ্রহণ করান। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আমি অন্তঃস্বত্বা হওয়ার বিষয়টি জানান এবং প্রয়োজনীয় ঔষধপথ্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে আমি আসামী আনোয়ারকে বিবাহের কাবিননামা ও প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য জোর তাগাদা দিলে আসামী আনোয়ার ইহাতে গড়িমসি করতঃ বিভিন্ন অজুহাতে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলার জন্য আমার উপর জোর চাপ সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে বিগত ১৫/১১/২০২৪ খ্রি:/ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০:০০ ঘটিকার সময় আসামী আনোয়ার এর জোর চাপের মুখে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করিতে অনীহা প্রকাশ করিলে আসামী আনোয়ার মিথ্যা ও ছলনার আশ্রয় নিয়া আমাকে কিছু ঔষধ এনে দেয় এবং উক্ত ঔষধগুলো গাইনী ডাক্তারের পরামর্শে আনিয়াছে মর্মে জানায়। আমি সরল বিশ্বাসে উক্ত ঔষধ সমূহ আসামীর শেখানো মতে সেবন করিলে দেখিতে পান যে, আমার অস্বাভাবিকভাবে পেটের ব্যাথা এবং পরবর্তীতে প্রচন্ড রক্তপাত শুরু হয়। উক্ত বিষয়ে আমি দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করার জন্য আসামী আনোযারকে বলিলে আসামী কোনরূপ চিকিৎসা গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই এবং এগুলো স্বাভাবিকভাবে হয় মর্মে জানান। আমি আসামী আনোযার’র কথায় বিশ্বাস করিয়া আর কোনরূপ চিকিৎসা গ্রহণ করি নাই। যার পরিপ্রেক্ষিতে এক পর্যায়ে বিগত ১৬/১১/২০২৪ খ্রি: তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় আমার গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট হইয়া যায়। ফলে আমি বুঝিতে পারি যে, আসামী আনোয়ার আমার সহিত মিথ্যা ও ছলনার আশ্রয় নিয়া আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করিয়াছেন। আমার মনে সন্দেহের উদ্রেগ সৃষ্টি হইলে, আমি বিগত ০৬/০২/২০২৫ খ্রি:/ তারিখ বেলা আনুমানিক ৩.০০ ঘটিকার সময় আসামী আনোযারকে আমাদের বিবাহের কাবিননামা সম্পাদন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করিলে আসামী আনোয়ার একবাক্যে বিবাহের কাবিননামা সম্পাদন করিবে না বলে আমাকে সাফ জানিয়ে দেয়। আমি আসামীর উক্তরূপ বেআইনী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করিবো মর্মে জানাইলে আসামী আনোয়ার আমার উপর অতিমাত্রায় ক্ষিপ্ত ও প্রতিহিংসা পরায়ন হইয়া আমাকে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড়, কিল ঘুষি মারিয়া আমাকে বিবস্ত্র করিয়া পুনরায় আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সর্বশেষবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। অতঃপর উক্ত বাসা হইতে আসামী আনোয়ার এর যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ নিয়া চলিয়া যায়। আমি আসামী আনোয়ার এর উক্তরূপ বে-আইনী ও অসামাজিক কর্মকান্ডের জন্য আনোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পদক্ষেপ নিবো আসামী উক্ত বিষয়ে জানিতে পারিয়া বিগত ১০/০২/২০২৫ খ্রি:/ তারিখ রাত অনুমান ৯:০০ ঘটিকার সময় আসামী আনোয়ারের ব্যবহৃত মোবাইল হইতে আমার ব্যবহৃত ইমু নাম্বারে ফোন করিয়া আসামী আনোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিলে আমাকে প্রাণে হত্যা করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে, এসিড নিক্ষেপ করে মুখ ঝলসাইয়া দিবে, অপহরণ করিয়া মানব পাচার চক্রের হাতে তুলিয়া দিবে মর্মে হুমকি প্রদান করে।আমি আসামী আনোয়ার এর উক্তরূপ কর্মকান্ডে আমি অত্যন্ত হতাশ ও বিস্মিত হয়েছি। এ বিষয মামলার বাদীনি তাসফিয়া আকতার প্রকাশ ইলা আরো জানায় যে, এমতাবস্থায় আসামী আনোয়ার আমাকে বিবাহের প্রলোভন দেখাইয়া ফুসলাইয়া উল্লেখিত ভাড়া বাসায় বৈধ বিবাহিত স্ত্রী হিসাবে বিশ্বাস জন্মাইয়া স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আসামী আনোযার আমাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষন করিয়াছে এবং সুকৌশলে ও ছলনার আশ্রয় নিয়া আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য এবং উক্ত বিষয়ে আসামী আনোয়া এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিলে আমাকে প্রাণে হত্যা সহ বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি প্রদান করিয়া আসামী আনোয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ধারা ও তৎসহ দন্ডবিধির ৩১২/৩১৩/৫০৬(২) ধারার সুস্পষ্ট শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করিয়াছে।
এ বিষয় ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রি: মাননীয়,নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-০৫, চট্টগ্রাম আদালতে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) এবং তৎসহ ১৮৬০ সনের দন্ডবিধি আইনের ৩১২/৩১৩/৫০৬(২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করিয়াছি , মামলা/ অভিযোগ খান পিবিআই চট্রগ্রাম এর নিকট তদন্তধীন রয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version