রাজবাড়ী সংবাদদাতা :
রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুরে জমি নিয়ে বিরোধে মারধর ও গুলি করে হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৯ এপ্রিল রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সদর উপজেলার খানখানাপুর মল্লিকপাড়ার মৃত নারায়ন দত্তের ছেলে হৃদয় দত্ত।
হৃদয় দত্ত অভিযোগে বলেন, মোঃ সামসুদ্দিন মৃধা রাজবাড়ী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের লাইসেন্সপ্রাপ্ত দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প ভেণ্ডার হওয়ায় জমি-জমা দলিল সম্পাদনা জ্ঞান রাখেন ও খানখানাপুর কামার পট্রির ভাদু মল্লিকের ছেলে মিন্টু মল্লিক তার সহযোগি। আমার মৃত পিতা শ্রী নারায়ন কুমার দত্তের নামীয় সম্পত্তি রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর মৌজার জে এল নং-২০২, দাগ নং-৩৬১৩, খতিয়ান নং-১৯৬৭, জমির শ্রেণী। বাড়ি, ওয়ারিশ সহ জমির পরিমান-০.১২৮০০০, দলিল নং- ৬৪৪, তাং- ১৯৯৬ সালের ২৯ নভেম্বর। গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর মোঃ সামসুদ্দিন মৃধা জমিতে তার ১শতাংশ জমি রয়েছে বলে দাবি করে বিভিন্ন ভাবে জোড়পূর্বক ভোগ দখলে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার দাবিকৃত জায়গাটি আমার পৈত্রিক ভিটা এবং একটি টিনের ঘর রয়েছে। গত ৮-৯ মাস যাবৎ একাধিকবার সন্ত্রাসী প্রকৃতির অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নিয়ে আমার পৈত্রিক জমিতে আসা যাওয়া করে। গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যা রাত ৭টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৪-৫জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে জমিতে মহড়া দেয়। বলতে থাকে যদি এ জমির ভোগ দখল ছেড়ে না দেই তাহলে আমাকে সহ আমার মা ও বোনকে প্রাণে মেরে ফেলে লাশ গুম করে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর মোঃ সামসুদ্দিন মৃধার নির্দেশনায় মিন্টু মল্লিক আমাকে রাত ৮টার দিকে খানখানাপুর লিটন মার্কেটের সামনে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এর একপর্যায়ে লোহার রড নিয়ে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দ্যেশে আঘাত করতে উদ্যোত হলে আমি দৌড়ে খানখানাপুর পানবাজার বিএনপি পার্টি অফিসের পাশে গিয়ে আশ্রয় নেই। এসময় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ আমাকে বসতে বলে ওইসময় মিন্টু মল্লিক এসে আমার বুকের বাম পাশে লাথি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেয়। এসময় উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শাহজাহান কাজী, আমজাদ হোসেন, শাহিন মিয়া আমাকে মিন্টু মল্লিকের হাত প্রাণে রক্ষা করে। আমাকে মারতে না পেরে মিন্টু মল্লিক উপস্থিত সকলের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগলাজ করতে থাকে। যদি জায়গা ছেড়ে না দেই তাহলে আমাকে গুলি করে হত্যা করার হুমকি প্রদান করে। উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তি আমার থেকে তাকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। মিন্টু মল্লিক গণমান্য ব্যক্তিদের সাথেও অসৎ আচরণ করে এবং অশালীন অঙ্গভঙ্গী করে। পরবর্তিতে মিন্টু মল্লিক ঘটনাস্থল থেকে সরাতে সাধারণ জনগণ ধাক্কা ধাক্কি করে এবং পড়ে গিয়ে আহত হয়। তার ভিত্তিতে মিন্টু মল্লিক উদ্দ্যেশ্যে প্রণোদিত ভাবে খানখানাপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুমন মল্লিক সহ আরো কিছু গণ্যমাণ্য ব্যক্তিকে সমাজে কলুষিত করার উদ্দ্যেশে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এ ঘটনার পর থেকে আমি, আমার মা ও বড় বোনকে নিয়ে জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ধরনের কর্মকান্ডে নিজ বাড়ীতেই ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে জীবন পাড় করছি। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের ক্ষতি সাধনের সম্ভাবনা রয়েছে।
অভিযুক্ত মিন্টু মল্লিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বয়সে আমার ছোট হলেও হৃদয় তুই তুকারী করে। এ কারণে ধমক দেই। পরে উল্টো আমাকেই মারধর করে। আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ এলাকার লোকজন জানেন। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।