রঞ্জু হোসাইন :
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটি) ঢাকা জেলা ইকুরিয়ায় লাইসেন্স নবায়ন শাখার এডি নূর হোসেনের ঘুষ- বাণিজ্য তুঙ্গে। টাকা দিলে কাজ, না দিলে নয়। পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ও অন্যতম দালাল, ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত এই এডি নূর হোসেন ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন, বর্তমানে ইকুরিয়া বিআরটিএ’র জেলা শাখায় কর্মরত। তিনি লাইসেন্স শাখার মহারতি। নূর হোসেন লাইসেন্সে শাখায় তৈরী করেছেন ঘুষের রাম রাজত্য। নূর হোসেন থাকলে টপ টু বটম ঘুষ বাণিজ্য করতে পারে। নূর হোসেনের দোসর আরো এক ঘুষখোর ইন্সপেক্টর আবু জামাল এই দুজনের সহযোগিতায় চলে গাবতলী বিআরটিএ। এযেন এক অভিনব ব্যবসা, এডি নুর হোসেন ও ইন্সপেকটর আবু জামাল দুজনে মিলে গড়েছে ঘুস বাণিজ্যের কারখানা। পত্রিকার অনুসন্ধানী দল ২২ জুন গাবতলী বিআরটিসি’তে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ড্রাইভারদের রানার কার্ডে পাশ বা ফেল কিছুই না লিখে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারা বুঝতে পারে না তাদের ভাগ্যে কি জুটেছে। ভুক্তিভোগি’র একজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার রোল ৮৮, হেভি লাইসেন্স তিনি সব কিছু ঠিকঠাক করলেও তাকে ফেল করিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ তিনি ঘুষ দিতে অপারগতা জানান। এভাবেই প্রতিদিন বহু ড্রাইভার কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়। সূত্র জানায় রাতে এডি নূর হোসেন ও ইন্সপেক্টর আবু জামাল দুজনে বসে তাদের নিয়োগকৃত দালালরা যে রোল নং ডায়রিতে লিখে পাঠায় সেগুলি পাশ করিয়ে দেয়া হয়, বাকি সব ফেল। এভাবেই চলছে এখানকার লাইসেন্স প্রদানের প্রথা। এই যদি হয় বিআরটিএ ‘র অবস্থা তাহলে সাধারণ জনগণ কোথায় যাবে। দালালদের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ গাবতলী বিআরটিএ পরীক্ষা কেন্দ্র। দালালদের মুলহোতা হল এডি নূর হোসেন প্রতিদিন মানুষকে ধোকা দিয়ে কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এডি নূর হোসেনের রয়েছে ঢাকায় নামে বেনামে ফ্লাট ও জমি, ব্যাংকে রয়েছে কোটি কোটি টাকার এফডিআর, টাঙ্গাইলে ডুপ্লেক্স বাড়ি। এমনকি সে প্রতিদিন নাইট ক্লাবের ও সদস্য। এর আগে মাদারীপুরে বিআরটিএ থাকাকালীন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী সাথে নূর হোসেন এর ছিল সর্বচ্চ সখ্যতা, ছাত্র আন্দোলনের সময় এডি নূর হোসেনের ভূমিকা ছিল ভয়াবহ। একনিষ্ঠ হওয়ার বদৌলতে নিক্সন চৌধুরীর বলতো এডি নূর হোসেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতো। এই ঘুষখোর আওয়ামী লীগের দোসর এডি নূর হোসেনের খুটির জোর কোথায় ? এর আগেও এই দুর্নীতিবাজ অফিসারের বিরুদ্ধে কয়েকটি পত্রিকায় নিউজ হয়েছিল, কিন্তু বিশেষ ওই উপর মহল সবকিছু এড়িয়ে গেছেন। এই দুর্নীতিবাজ অফিসার এডি নূর হোসেনকে এই বিআরটিএ ঢাকা জেলা থেকে সরানো না হলে বিআরটিএ’র প্রতি মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ বেড়েই চলবে। চেয়ারম্যান, সচিব ও প্রশাসনের কাছে ভুক্তভোগিদের জোর দাবি যেন এই অসাধু অফিসার এর সকল অবৈধ সম্পদের হিসাব বের করে আওয়ামী লীগ’এর এই দোসরকে এখান থেকে না সরালে বিআরটিএ দালাল মুক্ত হবে না। এবিষয়ে এডি নূর হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার কাজ আমি করি, এখানে কাউকে কইফিয়ত দেয়ার জন্য বসিনি, হ্যাঁ হালকা কিছু টাকা তারা খুশি হয়ে দেয় এটা তো দোষের কিছু নেই। (চলবে)