Sonaly Khobor

‎মোহাম্মদ হায়দার আলী, ‎চট্টগ্রাম


‎চট্টগ্রামের বাঁশখালী  উপজেলার কালীপুর  ইউনিয়নের ইজ্জতনগর এলাকায় অবস্থিত মালেক ম্যানশন নামের একটি ফ্যামেলি বাসার দারোয়ান নুরুল আলম (বাসির) অবহেলায় ৩ টি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় স্হানীয় গ্রাম্য সালিশ গত ৬/৭/২৫ইং জুলাই রোজ রবিবার ১০ই মহররম ইউপি সদস্য (২নং ওয়ার্ড) এর মেম্বার মোহাম্মদ ফরিদ এর উপস্থিতিতে মালেক ম্যানশনের বাসার নিচতলায় সম্পন্ন হয়।

অভিযুক্ত দারোয়ান


‎বিবরণে জানা যায়, গত ১৮/৬/২৫ইং রোজ বুধবার উপজেলাটির কালীপুর ইউনিয়নের ইজ্জতনগর এলাকায় ফ্যামিলি ভাড়া বাসা (মালেক ম্যানশনে) ‎এর নিচ তলায় ২ টি ও ২য় তলায় (সাংবাদিকের) ১টি বাসায় দারোয়ানের অবহেলায় ৩ টি বাসায় ভাড়াটিয়ারা অনুপস্থিত থাকিলে সে সুযোগে পরিকল্পনা মাপিক ডাকাতরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে ‎ডাকাতি করে স্বর্নলংকার সহ নগদ টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যায়। বাসার গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্রের ক্ষতি সাধন করে। এ বিষয়ে ৩ টি গ্রাম্য সালিশ অনুষ্ঠিত হলে ও দায় স্বীকারে অনাগ্রহ দারোয়ান নুরুল আলমের।


‎এ বিষয়ে গত ২৫/৬/২৫ইং একটি সালিশ অনুষ্ঠিত হয় এতে দারোয়ান সহ তার সাথে রাতে অবস্থান করা আব্দুল মান্নান কে স্ট্যাম্পমূলে অবগতি করা হয়।  ৭ দিনের সময় দেয়া হয় তারা যেন নিজেদের দায় স্বীকার করে। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও অজানা কারনে দারোয়ান অবহেলার দায় স্বীকারে অনাগ্রহ দেখান ও অপরজন পালিয়ে থাকেন। পরবর্তীতে গত ২/৭/২৫ইং আরেকটি সালিস হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হলে জমিদারের ছেলেদের অনুপস্থিতির কারনে সালিসটি অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে গত ৬/৭/২৫ইং চূড়ান্ত ভাবে ডাকাতির ঘটনায় শেষ সালিশ অনুষ্ঠিত হয়।

‎সরেজমিনে ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, মালেক ম্যানশনের দারোয়ান নুরুল আলম বাসি (মোর্শেদের বাপ) গত ১৮/৬/২৫ ইং রাত ১১ টায় বাসার মেইন গেইটে তালা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। আবার রাত ১২:৩০ টার দিকে ২ জন ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ সাজ্জাদ ও রনি ঘোষ বাহির হতে বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে দারোয়ান তাদের গেইটের তালা খুলে দেয়। তারপর দারোয়ান গেইটে তালা লাগিয়ে দিয়ে
‎তার রুমে (বাসার নিচতলায়) অবস্থান করে।এদিকে রাত ১:২০ টার দিকে দারোয়ান তার রুম হতে  বাহির হতে চাইলে ভিতর হতে বাহির হতে পারে না। বাহিরে নাকি কে বা কারা হুক লাকিয়ে দেয়। তার রুম হতে রাত ১:২০ টায় বের হতে না পেরে রুমের ভিতর হতে কিছু যন্ত্রপাতি দিয়ে বাহিরে লাগানো হুক খুলে। ততক্ষণে তার ২ ঘন্টার কাছাকাছি সময় লেগে যায়। এদিকে ডাকাতরা পরিকল্পনামাপিক ৩ টি বাসায় ডাকাতি করে চলে যায়।  অথচ সে সময় দারোয়ানের রুমে আব্দুল মান্নান নামের একজন সিএনজি ড্রাইভার ও উপস্থিত ছিল। তাকে ও না ডেকে দারোয়ান ২ ঘন্টা ধরে কেন ভিতর থেকে বাহিরের হুক খোলার চেষ্টা করে এ বিষয়ে জমিদার ও স্হানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগনের প্রশ্ন। দারোয়ান এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারে না। এদিকে অবহেলার দায় স্বীকারে ও অনাগ্রহ দারোয়ান নুরুল আলমের।



‎ঘটনার সময় কল দিয়ে কেন জমিদার কে জানানো হল না এ বিষয়ে জমিদারের ছেলে মোহাম্মদ জামাল দারোয়ানের নিকট জানতে চাইলে দারোয়ান নুরুল আলম কোন সদুত্তর দিতে পারে নি। এ বিষয়ে  ২য় তলার ভাড়াটিয়া আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, এমন একটি বিপদের সংকেত পেয়ে কেন দারোয়ান জমিদার সহ কাওকে জানাল না সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকে যায়। তাছাড়া স্হানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গনের ও একই কথা কেন দারোয়ান কাওকে না জানিয়ে ঘটনার বিষয়ে দামাচাপা দিতে চাইছে এর পিছনে কারন কি?

‎এ দিকে গত ৬/৭/২৫ইং তারিখে গ্রাম্য সালিশে ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ ফরিদ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্য বলেন, মালেক ম্যানশনের ভাড়া বাসার ডাকাতির ঘটনায় দারোয়ানের যতেষ্ট অবহেলা রয়েছে। এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। তবে যেহেতু আমরা কেও চোখে দেখিনি কে বা কারা ডাকাতি করেছে!  তাই কাওকে সরাসরি ডাকাত বা চোর হিসেবে সাবস্ত করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে ভিকটিমরা চাইলে নিজ দায়িত্বে আইনের আশ্রয় নিতে পারে এতে আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগীতা পাবে। ফরিদ মেম্বার আরও বলেন, এটা একটা আমার এলাকায় নতুন ঘটনা।দীর্ঘ ১০/১৫ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। এটার জন্য আমি ও আমরা লজ্জিত।এমন একটি অনাকাংখিত ডাকাতির ঘটনার জন্য আমরা ধিক্কার জানায়। এ ঘটনার পিছনে কারা জড়িত তা আমরা যত দিনই লাগুক খতিয়ে দেখব ইনশাআল্লাহ। ডাকাত সে যেই হউক তার খবর পাওয়া মাত্র আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি প্রদক্ষেপ নিব। ইউপি সদস্য ফরিদ মেম্বার সালিশে উপস্থিত ভিকটিমরা সহ সকল ভাড়াটিয়া ও দারোয়ানের বিষয়ে জমিদারের ছেলেদের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন।

‎এ বিষয়ে জমিদারের ছেলে মোহাম্মদ জয়নাল সালিসে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের বাবা বেঁচে নেই। আমরা ভাইয়েরা সবাই বাঁশখালীতে থাকি না। দারোয়ান যেহেতু আমাদের চাচা সম্পর্কের ও বিশ্বস্হ তাই আমরা এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে তা কল্পনাও করিনি। ঘটনা যেহেতু একটা ঘটে গেছে সে জন্য সকলের কাছে ও ভিকটিমদের কাছে দূঃখ প্রকাশ করছি। এ বিষয়ে আমরা পারিবারিক ভাবে কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিব ইনশাআল্লাহ।  দারোয়ান পরিবর্তন সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানান জমিদারের ছেলে মোহাম্মদ জয়নাল।

‎ডাকাতির ঘটনায় স্হানীয় সালিশকার মোহাম্মদ নাসির বলেন,দারোয়ান নুরুল আলম বাসি কে অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি ইউপি মেম্বার সহ। সে  ডাকাতি হওয়ার বিষয়ে কোন কিছু জানে না। কে বা কারা ডাকাতি করেছে তাদের কে চিনেও না। আর সে নিজেও ও ডাকাতির সাথে জড়িত নয়। সে কোরআন শরীফ নিয়ে শপথ করে প্রতিজ্ঞা করেছে সে ডাকাতির বিষয়ে কিছুই জানে না। তবে দারোয়ান হিসেবে তার একটা দায়িত্ব ছিল বিষয়টা সাথে সাথে সবাই কে জানানো। সেটা না করে সে ভূল করেছে বলে দূঃখ প্রকাশ করেন। তবে এ ঘটনার জন্য কোন প্রকার দায় নিতে সে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।

‎এদিকে সালিসে উপস্থিত স্হানীয় গন্যমান্যগন সকলেই এমন একটি পরিকল্পনামাপিক ডাকাতির ঘটনায় দারোয়ানের দায়িত্ব পালন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে। এ বিষয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে জমিদারের ছেলেদের প্রতি বিশেষ জোর দাবি ও পরামর্শ দেন। ডাকাতির ঘটনায় দারোয়ানের অবহেলা ও ডাকাত সনাক্ত করনে সালিসে আরও নানান আলোচনা সমালোচনা হয়। দারোয়ান নুরুল আলম চাকুরীতে থাকা অবস্থায় আর কোন চুরি বা ডাকাতি হলে তাকেই তার দায় নিতে হবে বলে হুশিয়ারি করেন সকলে এমন কি ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া স্বর্নলংকার সহ অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধারে এবং ডাকাত সনাক্ত করনে গ্রামের সচেতন নাগরিক ও স্হানীয়রা সজাগ থাকবে বলে জানান। প্রয়েজনে ১ বছর সময় লাগুক।কিন্ত কে বা কারা এই ডাকাতির কাজে জড়িত ছিল তাদের বিষয় অনুসন্ধান করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন স্হানীয় সালিসকার নাসির,দিদার সহ আরও অনেকে।

‎উক্ত সালিশে উপস্থিত ছিল জমিদারে ছেলে মোহাম্মদ জামাল,কামাল,জয়নাল, ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ ফরিদ,নাসির,দীদার, পাশের বাড়ীর জমিদার মোহাম্মদ আবু ছৈয়দ, মোহাম্মদ মাবুদ, শহিদুল ইসলাম, দারোয়ান নুরুল আলম, নুরুল ইসলাম,আব্দুল মালেক, ভিকটিম সাংবাদিক হায়দার আলী (এম.এ),ভিকিটিম মোহাম্মদ মানিক,মনির,সাজ্জাদ,রনি ঘোষ,তকি ও অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা সহ স্হানীয় গন্যমান্যব্যক্তিগন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version