বিশেষ প্রতিনিধি :
অধ্যক্ষের খেয়াল-খুশিতে চলছে রাজধানীর নাজনীন স্কুল এন্ড কলেজ। সরকারি বিধি-বিধান না মানার অভিযোগ। সরকারী বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেটের গ্রীন রোড সংলগ্ন পূর্ব রাজাবাজারে নাজনীন স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শামীম আনোয়ার। সরকারী নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে গভর্নিং বডির সিন্ধান্ত না মেনেই প্রতিষ্ঠানটি খোলা বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজের খেয়াল-খুশিমতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শিক্ষার্থী অভিভাবক সাধারণ মানুষের নজরে পড়ার মতো নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে শামীম আনোয়ার। একজন সচেতন অভিভাবকের অভিযোগের পরিপেক্ষিতে সরেজমিন জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শামীম আনোয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার নামে সরকারি বন্ধের দিন শনিবারও পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন, যা তিনি নিজেই মানছেন না। তিনি তার নিজের মেয়ের বিয়ের জন্য ২৬মে সোমবার প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়ে নোটিশ জারি করেছেন। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সামনে রেখে প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করে। বিধি-বিধান না থাকা সত্ত্বেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শামীম আনোয়ার অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে একজন অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক (পরিতোষ কুমার)-কে দুই বছরের জন্য এক্সটেনশন দিয়ে পুনঃনিয়োগ করেছেন। নিয়োগ করা এই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতাদি দিচ্ছেন। এতে প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। যদিও বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য এই বিষয়ে আরো চারজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশমতে সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা নির্দেশনা থাকলেও নাজনীন স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামীম আনোয়ার সন্ধ্যার পর এই প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং সেন্টারে ব্যবহার করে আসছে। এতে প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও পানির অপচয় হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, রাতের কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থার নামে অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে বলে কানেঘোষা অনেক দিনের। আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং ক্লাসে পড়াশোনার সুযোগ দেননা শামীম আনোয়ার। অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শামীম আনোয়ারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে, তিনি সোনালী খবরকে জানান, মেয়ের বিবাহের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেছি, এটা প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসাবে আমি করার ক্ষমতা রাখি। অধ্যক্ষ শামীম আনোয়ার আরও বলেন আমি নিজ ক্ষমতা বলে, বছরে তিনদিন বন্ধ রাখতে পারি। বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। এলাকার সচেতন জগোষ্ঠীর মতে, যত দ্রুত সম্ভব এই দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠান প্রধান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শামীম আনোয়ারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম রক্ষা ও বিধিবহির্র্ভূত কর্মকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। শামীম আনোয়ারের অনৈতিকতার এসব অভিযোগ লিখিতভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার মহাপরিচালক বরাবর আবেদন পড়েছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। খোদ রাজধানীর নাজনীন স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রধান শিক্ষকের ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিধি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। নাজনীন স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং সরকারি নিয়ম ও বিধি-বিধান মতো প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ দেখতে চায় শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মানুষ।